bn বাংলা
বাংলা বাংলা
English English
عربي عربي


+8801575-547999
সকাল ৯টা হতে রাত ১০টা
Community Welfare Initiative

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়‍্যাহ রহিমাহুল্লাহ-র কিছু মূল্যবান বাণী

১. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

আল্লাহ্‌র একটি সুন্নাহ (নিয়ম) হলো—যখন তিনি তাঁর দীনকে বিজয়ী করতে চান, তখন তিনি এমন কাউকে দাঁড় করান, যে তার বিরোধিতা করে। অতঃপর তিনি তাঁর কালেমার মাধ্যমে হককে প্রকাশ করেন এবং তিনি বাতিলের উপর হককে ছুড়ে মারেন, ফলে তা (বাতিল) গুঁড়িয়ে যায়।[১]

২. ইবনুল কাইয়্যিম (রহিমাহুল্লাহ) ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন,

দুনিয়াতেই একটি জান্নাত আছে, যে এতে প্রবেশ করেনি, সে আখিরাতের জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না।[২]

৩. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

“ধৈর্য ও দৃঢ়-ঈমানের মাধ্যমেই দীনের নেতৃত্ব অর্জিত হয়।” আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “আর আমি তাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে নেতা বানিয়েছিলাম, যারা আমাদের আদেশে পথ দেখাতো—যখন তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল এবং আমাদের আয়াতসমূহে দৃঢ়-ঈমান রাখত।”[৩][৪]

৪. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

যেমন দেহ রোগে আক্রান্ত হলে খাদ্যের স্বাদ পায় না, তেমনি দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা থাকলে অন্তর আল্লাহর যিক্‌রের স্বাদ পায় না।[৫]

৫. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

আমার শত্রুরা আমার সঙ্গে কী করতে পারবে? আমার জান্নাত ও বাগান তো আমার বুকে। আমি যেখানেই যাই, তা আমার সঙ্গেই থাকে—তাতে কোনো বিচ্ছেদ ঘটে না। আমাকে বন্দি করলে তা আমার একান্ত নির্জনতা, আমাকে হত্যা করলে তা শহীদি, আর আমাকে দেশছাড়া করলে তা আল্লাহর পথে সফর।[৬]

৬. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ইসতিখারাহ করে, মানুষদের সঙ্গে পরামর্শ করে এবং নিজের কাজে স্থির থাকে—সে কখনো অনুতপ্ত হয় না।[৭]

৭. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

إيّاك نعبد — এই বাক্য রিয়া (লোক দেখানো) থেকে বাঁচায়, আর ‎وإيّاك نستعين — এই বাক্য অহংকার থেকে বাঁচায়।[৮]

৮. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

যে চিরন্তন সুখ চায়, সে যেন দাসত্বের দরজায় লেগে থাকে।[৯]

৯. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

প্রশংসনীয় ভয় হলো—যা তোমাকে আল্লাহর হারাম কাজ থেকে বিরত রাখে।[১০]

১০. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

আলেম ও আরেফ ব্যক্তি কারও ওপর নিজের কোনো অধিকার মনে করে না এবং অন্যের ওপর নিজের কোনো মর্যাদাও দেখায় না। এজন্য সে কাউকে দোষারোপ করে না, দাবি করে না, কিংবা ঝগড়াও করে না।[১১]

১১. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

যা আখিরাতে কোনো উপকারে আসবে না, তা বর্জন করাই হলো ‘যুহদ’ (সংসার বিমুখতা); আর যা আখিরাতে ক্ষতি ডেকে আনতে পারে বলে ভয় হয়, তা বর্জন করাই হলো ‘ওয়ারা‘’ (সতর্কতা)।[১২]

১২. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

সত্যিকার সম্মান (কারামাত)-এর চূড়ান্ত পরিণতি হলো — দীনের উপর সুদৃঢ় থাকা (ইস্তিকামা)।[১৩]

১৩. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

অহংকার শির্কের চেয়েও খারাপ, কারণ অহংকারী ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করতেই অস্বীকৃতি জানায়, অথচ মুশরিক ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কিছুকেও ইবাদত করে।[১৪]

১৪. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

যে দলীল থেকে সরে যায়, সে পথ হারিয়ে ফেলে। আর প্রকৃত দলীল কেবলই তা—যা রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এনেছেন।[১৫]

১৫. ইবন তাইমিয়‍্যাহ (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,

জীবনের বিপদ ও পরীক্ষাগুলো গরম-ঠাণ্ডার মতোই। যদি বান্দা বুঝে যায় যে এগুলো আসবেই, তাহলে সে সেগুলোর কারণে রাগান্বিত হয় না, হতাশ হয় না, এবং দুঃখিতও হয় না।[১৬]

  1. [১]মাজমূ‘ ফাতাওয়া, খণ্ড: ২৮, পৃ: ৫৭।
  2. [২]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ১, পৃ: ৪৫২।
  3. [৩]সূরা আস-সাজদা: ২৪।
  4. [৪]মাজমূ‘ ফাতাওয়া, খণ্ড: ৩, পৃ: ৩৫৮।
  5. [৫]মাজমূ‘ ফাতাওয়া, খণ্ড: ৯, পৃ: ৩১২।
  6. [৬]আল-ওয়াবিলুস সাইয়্যিব, ইবনুল কাইয়্যিম, পৃ: ৪২।
  7. [৭]আল-ওয়াবিলুস সাইয়্যিব, পৃ: ১১২।
  8. [৮]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ১, পৃ: ৭৮।
  9. [৯]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ১, পৃ: ৪২৯।
  10. [১০]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ১, পৃ: ৫১১।
  11. [১১]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ১, পৃ: ৫১৯।
  12. [১২]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ২, পৃ: ১২।
  13. [১৩]মাজমূ‘ ফাতাওয়া, খণ্ড: ১১, পৃ: ২৯৮।
  14. [১৪]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ২, পৃ: ৩১৬।
  15. [১৫]মিফতাহু দারিস্-সা‘আদাহ, খণ্ড: ১, পৃ: ৮৩।
  16. [১৬]মাদারিজুস সালিকীন, খণ্ড: ৩, পৃ: ৩৬১।
Share on