গম্বুজ ও মাজার নির্মাণ হারাম হওয়ার প্রমাণে ৭টি সহীহ হাদীস
প্রথম হাদীস:
গম্বুজ নির্মাণকারীরা সবচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টি: আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন,
أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ، وَأُمَّ سَلَمَةَ ذَكَرَتَا كَنِيسَةً رَأَيْنَهَا بِالحَبَشَةِ فِيهَا تَصَاوِيرُ، فَذَكَرَتَا لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «إِنَّ أُولَئِكَ إِذَا كَانَ فِيهِمُ الرَّجُلُ الصَّالِحُ فَمَاتَ، بَنَوْا عَلَى قَبْرِهِ مَسْجِدًا، وَصَوَّرُوا فِيهِ تِلْكَ الصُّوَرَ، فَأُولَئِكَ شِرَارُ الخَلْقِ عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ القِيَامَةِ»
“উম্মে হাবীবাহ ও উম্মে সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা হাবশায় তাদের দেখা একটা গির্জার কথা বলেছিলেন, যাতে বেশ কিছু মূর্তি ছিল। তারা উভয়ে বিষয়টি নবী ﷺ -এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেন: তাদের অবস্থা ছিল এমন যে, কোনো সৎ লোক মারা গেলে তারা তার কবরের উপর মসজিদ বানাতো। আর তার ভিতরে ঐ লোকের মূর্তি তৈরি করে রাখতো। কিয়ামত দিবসে তারাই আল্লাহর নিকট সবচাইতে নিকৃষ্ট সৃষ্টজীব বলে পরিগণিত হবে।”[১]
দ্বিতীয় হাদীস:
মাজারকে মসজিদে পরিণতকারীদের প্রতি আল্লাহর লা‘নত: আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর মৃত্যুর সময় অসুস্থ অবস্থায় বলেছিলেন:
«لَعَنَ اللهُ اليَهُودَ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ»، لَوْلاَ ذَلِكَ أُبْرِزَ قَبْرُهُ غَيْرَ أَنَّهُ خَشِيَ – أَوْ خُشِيَ – أَنَّ يُتَّخَذَ مَسْجِدًا»
“ইয়াহূদী ও নাসারাদের প্রতি আল্লাহর লা‘নত; কারণ তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছিল।” আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, “এই কারণেই নবী ﷺ-এর কবর প্রকাশ্যে করা হয়নি; কারণ আশঙ্কা ছিল এটি যেন মসজিদে পরিণত না হয়।”[২]
তৃতীয় হাদীস:
কবরকে মসজিদ বানানোর স্পষ্ট নিষেধ: জুন্দুব ইবন আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি নবী ﷺ-কে মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে বলতে শুনেছি:
أَلَا وَإِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ كَانُوا يَتَّخِذُونَ قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ وَصَالِحِيهِمْ مَسَاجِدَ، أَلَا فَلَا تَتَّخِذُوا الْقُبُورَ مَسَاجِدَ، إِنِّي أَنْهَاكُمْ عَنْ ذَلِكَ»
“জেনে রাখো, তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবী ও সৎ ব্যক্তিদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছিল। তোমরা কবরকে মসজিদে পরিণত করো না। আমি তোমাদেরকে তা থেকে নিষেধ করছি।”[৩]
পঞ্চম হাদীস:
শাসকের দায়িত্ব—মাজারসমূহ ভেঙে সমান করে ফেলা: আবু হাইয়্যাজ আল-আসাদী বলেন, আলী রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু আমাকে বললেন,
أَلَا أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي عَلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ «أَنْ لَا تَدَعَ تِمْثَالًا إِلَّا طَمَسْتَهُ وَلَا قَبْرًا مُشْرِفًا إِلَّا سَوَّيْتَهُ»
“আমি কি তোমাকে সেই কাজের জন্য প্রেরণ করব না, যেই কাজের জন্য রসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে পাঠিয়েছিলেন? তা হলো— কোনো মূর্তি দেখলে তা ভেঙে ফেলবে, আর কোনো উঁচু কবর দেখলে তা সমান করে দিবে।”[৪]
ষষ্ঠ হাদীস:
কবরের উপর নির্মাণ করা নিষিদ্ধ: জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
«نَهَى رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُجَصَّصَ الْقَبْرُ، وَأَنْ يُقْعَدَ عَلَيْهِ، وَأَنْ يُبْنَى عَلَيْهِ»
“রাসূলুল্লাহ ﷺ নিষেধ করেছেন যে, কবর পাকা করা, তার উপর বসা বা তার উপর ভবন নির্মাণ করা।”[৫]
সপ্তম হাদীস:
কবরকে মসজিদ বানানোদের বলা হয়েছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ: আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি:
«إِنَّ مِنْ شِرَارِ النَّاسِ مَنْ تُدْرِكُهُ السَّاعَةُ وَهُمْ أَحْيَاءٌ، وَمَنْ يَتَّخِذُ الْقُبُورَ مَسَاجِدَ»
“মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হলো তারা, যাদের জীবনকালে কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং যারা কবরকে মসজিদ বানাবে।”[৬]
আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও নিরাপত্তা চাই।