নারী স্বাধীনতা বনাম নিরাপত্তা বিনষ্ট করা
নারী সাবধান! যেন তুমি সেই ভেড়াগুলোর মধ্যে না পড়ো, যাদেরকে নেকড়ে “স্বাধীনতা” নামে ডেকে নেয়! কখনও তোমার কানে এক মিষ্টি কণ্ঠ ভেসে আসবে, বলবে: “স্বাধীন হও! কোনো বন্ধনে বাঁধা থেকো না!” কিন্তু সেই কণ্ঠের আড়ালে লুকিয়ে থাকে ধারালো দাঁত, আর কালো উদ্দেশ্য। সব “স্বাধীনতার আহ্বান” সত্য নয়, আর সব “তোমার অধিকার” দাবি করা লোকও তোমার মঙ্গল চায় না। বিষয়টা ভালোভাবে বুঝতে একটি গল্প শোনো—
এক শান্ত সন্ধ্যায়, এক দয়ালু রাখাল তার ভেড়াগুলোকে নিয়ে ফিরে এলো খোঁয়াড়ে। সে দরজাগুলো ভালোভাবে বন্ধ করল, নিশ্চিন্ত হলো যে তার পাল নিরাপদে আছে, তারপর আল্লাহর প্রশংসা করে শান্ত মনে ঘরে ফিরল। কিন্তু জঙ্গলের গভীরে ক্ষুধার্ত নেকড়েদের চোখ চাঁদের আলোয় ঝলমল করছিল। তারা অপেক্ষা করছিল কখন সুযোগ পাবে মোটা ভেড়াগুলোকে ছিন্নভিন্ন করার। একটা নেকড়ে ধূর্তভাবে বলল: “আমরা ওদের জোর করে নেব না, বরং এমন করব যেন ওরা নিজেরাই আমাদের কাছে আসে!” তখন সব নেকড়ে মিলে খোঁয়াড়ের সামনে এক বিশাল বিক্ষোভ শুরু করল, চিৎকার করে বলছে—“আমরা ভেড়াদের স্বাধীনতা চাই! না বন্দিত্বে! না শৃঙ্খলে!” ভেড়াগুলো সেই আওয়াজ শুনে দুলে উঠল সহানুভূতিতে। একটি ভেড়া বলল: “দেখো! নেকড়েরা আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে! কী দয়ালু তারা!” তারপর তারা উচ্ছ্বাসে দরজায় ধাক্কা দিতে লাগল, যতক্ষণ না দরজা ভেঙে যায়। সব ভেড়া দৌড়ে বেরিয়ে গেল তাদের তথাকথিত “স্বাধীনতা” উদযাপন করতে, কিন্তু এক মুহূর্তের মধ্যেই সেই স্লোগান পরিণত হলো নেকড়ের হুংকারে, স্বাধীনতা হয়ে গেল বিশৃঙ্খলা, আর রাত হয়ে গেল রক্তাক্ত শোকের দৃশ্য যে নেকড়েরা “স্বাধীনতা”র দাবিতে চিৎকার করছিল, তারাই ছিল প্রথম হত্যাকারী। ভোরে রাখাল ফিরে এলো তার পাল খুঁজতে। কিন্তু সে পেল কেবল ভেড়ার ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ। সে নীরবে বসে থেকে কেঁদে বলল: “ওরা প্রতারিত হয়েছে ‘স্বাধীনতা’র নামে, আর তাদের খেয়েছে সেই নেকড়ে, যে তাদের পক্ষের দাবিদার সেজেছিল।”
আজও ঠিক এমনটাই ঘটছে আমাদের যুগে। তবে এরা আর জঙ্গলের নেকড়ে নয়, মানুষের রূপে নেকড়ে! যারা “নারীর স্বাধীনতা”র নামে আহ্বান জানায়, অথচ তাদের উদ্দেশ্য নারীর কাছে স্বাধীনভাবে পৌঁছানো! যারা হিজাবকে আক্রমণ করে, লজ্জা-শালীনতাকে তুচ্ছ করে, অথচ দাবি করে তারা “সম্মানের রক্ষক”!
আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿وَٱللَّهُ يُرِيدُ أَن يَتُوبَ عَلَيۡكُمۡ وَيُرِيدُ ٱلَّذِينَ يَتَّبِعُونَ ٱلشَّهَوَٰتِ أَن تَمِيلُواْ مَيۡلًا عَظِيمٗا ٢٧﴾ [النساء: ٢٧]
“আল্লাহ চান তোমাদের তওবা কবুল করতে, কিন্তু যারা কামনাকে অনুসরণ করে তারা চায় তোমরা একেবারে পথভ্রষ্ট হয়ে যাও।”[১]
তাই হে ইসলামি মর্যাদার অধিকারী কন্যা, সাবধান! যেন কোনো নেকড়ে তোমাকে চকচকে “স্বাধীনতা”র স্লোগানে ধোঁকা না দেয়। প্রকৃত স্বাধীনতা হিজাব খুলে ফেলার মধ্যে নয়—বরং লজ্জা, পবিত্রতা ও ঈমানের ওপর অটল থাকার মধ্যেই আসল মুক্তি। এ বার্তাটি ছড়িয়ে দাও, যেন হৃদয়গুলো জেগে ওঠে, নেকড়েরা যেন আর কোনো ভেড়াকে প্রতারণা করতে না পারে।
- [১]সূরা আন-নিসা, আয়াত নং ২৭।