আল্লাহ আরশের উপর — তবে “إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَى رَبِّي” এর মানে কী?
প্রশ্ন: আহলুস সুন্নাহ আল্লাহর সিফাত-সংক্রান্ত আয়াতের তাওয়ীল বা অপব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করেন। আর তারা আল্লাহকে আরশের উপর বলে থাকেন। সে হিসেবে কুরআনে আসা ইবরাহীম আলাইহিস সালামের বক্তব্য, (إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَى رَبِّي) — এই আয়াতে কি তাওয়ীলের (অর্থ ঘুরিয়ে দেওয়ার) প্রয়োজন হয় না?
উত্তর: আলহামদুলিল্লাহ, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি দরুদ ও সালাম শেষে—
প্রথমত:
কুরআন, সুন্নাহ, ইজমায়ে সালাফ ও সকল সুস্থ বিবেক, স্বাভাবিক ফিতরাত অনুযায়ী আহলুস সুন্নাত আল্লাহ তাআলাকে সর্বোচ্চ সৃষ্টি আরশের বলে ঈমান রাখেন। এর বিপরীত সকল বিশ্বাসকে তারা কুফর ও শির্ক বলে গণ্য করেন।
দ্বিতীয়ত:
আহলুস সুন্নাহ যে তাওয়ীলকে প্রত্যাখ্যান করেন, সেটি হলো—
শব্দকে তার স্পষ্ট (প্রধান) অর্থ থেকে সরিয়ে দুর্বল অর্থে নেওয়া যখন এর পক্ষে কোনো দলীল থাকে না, বরং কেবল কিছু কল্পিত সন্দেহ-শঙ্কার কারণে, যেমন—
• “ইয়াদ” (হাত)-কে কুদরাহ (ক্ষমতা) বা কোওয়াহ (শক্তি) অর্থে নেওয়া।
• “ইস্তাওয়া”-(উপরে উঠা)কে ইস্তাওলা (দখল/প্রভুত্ব করা) অর্থে নেওয়া।
কিন্তু কোনো প্রসঙ্গ যদি সত্যিকারের তাওয়ীল বা সঠিক ব্যাখ্যার দাবি করে এবং তার জন্য দলীল থাকে, তখন সেটি অস্বীকার করা হয় না।
উদাহরণ: আল্লাহ বলেন—
﴿فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ﴾ [النحل: ٩٨]
— এর বাহ্যিক অর্থ হচ্ছে, কুরআন পড়ে নেওয়ার পর আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হবে। কিন্তু সহীহ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, তিলাওয়াত শুরু করার আগে (আউযুবিল্লাহ) পড়তে হয়। তাহলে আয়াতের অর্থ দাঁড়াবে: “যখন তুমি কুরআন পড়তে ইচ্ছা করবে, তখন আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে”।
আল্লাহর সিফাত-সংক্রান্ত আয়াতের ক্ষেত্রে—
এর স্পষ্ট অর্থ বহন করা থেকে বিরত থাকার কোনো দলীল নেই, কারণ এগুলোকে আরবি ভাষার দৃষ্টিতে তাদের আসল অর্থেই নেওয়া সম্ভব এবং এতে কোনো অবাস্তবতা বা অসম্ভবতা নেই, কিংবা এমন কিছু নেই যা আল্লাহর শানে অসম্মানজনক।
তাওয়ীল তো তখনই হবে, যখন প্রকৃত অর্থ ধরা অসম্ভব হয় বা তার দ্বারা কোনো অসঙ্গত বিষয় প্রমাণিত হয়—যেমন আল্লাহকে সৃষ্টির সাথে তুলনা করা। কিন্তু শরীয়তের নস (কুরআন-সুন্নাহর স্পষ্ট বাণী) এসব থেকে পবিত্র।
যদি সত্যিই এগুলোর বাহ্যিক অর্থে সৃষ্টির সাথে তুলনা বোঝাতো, তাহলে এগুলো হক (সত্য), নূর ও বায়ান (স্পষ্ট বর্ণনা) হতে পারতো না। বরং নবী ﷺ অবশ্যই উম্মতকে এগুলোর এই “ভুল” ধারণা থেকে সতর্ক করতেন—কিন্তু তা কখনো ঘটেনি। আর জানা কথা যে প্রয়োজনের চেয়ে বিলম্বিত ব্যাখ্যা (تأخير البيان) শরীয়তে গ্রহণযোগ্য নয়—এ থেকে প্রমাণিত হয় যে বাহ্যিক অর্থই সত্য, যা কোনো তুলনা বোঝায় না। সুতরাং যখন কোনো বিরোধী প্রমাণ নেই, তখন মূলনীতি হচ্ছে—আসল অর্থই গ্রহণ করা।
আহলুস সুন্নাহ সর্বসম্মতিক্রমে বলেন:
কুরআন ও সুন্নাহতে যে সব সিফাত এসেছে, আমরা সেগুলোতে ঈমান রাখি এবং এগুলোকে বাস্তব অর্থে গ্রহণ করি—মাজায (রূপক) অর্থে নয়—তবে কিভাবে তা ঘটেছে, তার বিবরণ দিই না এবং নির্দিষ্ট সঙ্গায়িত না।
ইমাম ইবন আব্দিল বার (রহ.) বলেন:
“আহলুস সুন্নাহ সর্বসম্মতভাবে কুরআন ও সুন্নাহতে বর্ণিত সকল সিফাতে ঈমান রাখে এবং সেগুলোকে বাস্তব অর্থে গ্রহণ করে, মাজায বা রূপক অর্থে নয়। তবে তারা কিভাবে তা ঘটে, সে সম্পর্কে কিছু বলে না।কিন্তু বিদআতপন্থী, জাহমিয়া, মু‘তাযিলা, খারিজিরা সবই এগুলো অস্বীকার করে এবং বাস্তব অর্থে গ্রহণ করে না।” — আল-তামহীদ (৭/১৪৫)
তাওয়ীল না করার কারণ:
- তাওয়ীল ভিত্তি করে এই ভুল ধারণার উপর যে সিফাতের বাহ্যিক অর্থ সৃষ্টির সাথে তুলনা করে—এটি গুরুতর ভ্রান্তি।
- তাওয়ীল আসল নিয়মের বিপরীত; এটি তখনই সঠিক যখন স্পষ্ট দলীল থাকে।
- তাওয়ীলকারীরা “আল্লাহর হাত, চেহারা, উপরে থাকা, আরশের উপরে উঠা, নিকটতম আসমানে নেমে আসা” এর বাস্তব অর্থকে বুদ্ধি দিয়ে অসম্ভব মনে করে—এটি কুরআন ও রাসূল ﷺ এর বাণীর উপর বড় আঘাত।
তৃতীয়ত:
আল্লাহ বলেন—
﴿إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَى رَبِّي سَيَهْدِينِ﴾ [الصافات: ٩٩]
এটি অন্য আয়াতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে—
﴿إِنِّي مُهَاجِرٌ إِلَى رَبِّي﴾ [العنكبوت: ٢٦]
অর্থাৎ—“আমি আমার রবের দিকে হিজরত করছি”।
এখানে “যাওয়া” বলতে হিজরত বোঝানো হয়েছে—যা ছিল শামের ভূমির দিকে।
যেমন আল্লাহ বলেন—
﴿وَنَجَّيْنَاهُ وَلُوطًا إِلَى الْأَرْضِ الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا لِلْعَالَمِينَ﴾ [الأنبياء: ٧١]
কুরআন এক আয়াতকে আরেক আয়াত দিয়ে ব্যাখ্যা করে।
তবে বাস্তব অর্থে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহর দিকে যাওয়া—এটি অসম্ভব নয়। যেমন রাসূল ﷺ মি‘রাজে উঠেছিলেন, কিংবা ঈসা (আ.)-কে আল্লাহ নিজের দিকে তুলেছেন—এসব সম্ভব। কিন্তু এখানে আয়াতের প্রসঙ্গে শাব্দিক অর্থ উদ্দেশ্য নয়, বরং হিজরতই উদ্দেশ্য—যা অন্যান্য আয়াতে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
এটি তাওয়ীলের প্রচলিত (পরবর্তী যুগের) অর্থে তাওয়ীল নয়—বরং একটি আয়াতকে আরেকটি আয়াত দিয়ে স্পষ্ট ও সুস্পষ্ট করা।
চতুর্থত:
আমরা যদি (إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَى رَبِّي) — এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আসা সালাফে সালেহীনের ব্যাখ্যার দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো যে, প্রাচীন ও আধুনিক জাহমীরা এ আয়াত থেকে “আল্লাহকে সর্বত্র বিরাজমান” বা আরশের উপরে না থাকা”র যে দাবী করছে, এমনকিছু তারা বুঝেননি বা বলেননি। বরং তারা এমন সব কথা বলেছেন যাতে আল্লাহকে কেউ আরশের উপর নয় এমনটি বুঝতে না পারে। নীচে আমি এ আয়াতের ব্যাপারে সালাফে সালেহীনের বক্তব্য তুলে ধরছি।
ইমাম ত্বাবারী বলেন,
আয়াত: ﴿وَقَالَ إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَى رَبِّي سَيَهْدِينِ﴾
তাফসীর: আল্লাহ তাঁর নবী ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর কথা বর্ণনা করছেন—যখন আল্লাহ তাঁকে তাঁর কওমের উপর যুক্তিতে বিজয়ী করলেন এবং তাদের চক্রান্ত থেকে রক্ষা করলেন, তখন ইবরাহীম বললেন: “আমি আমার রবের দিকে যাচ্ছি” — অর্থাৎ আমি আমার কওমের শহর থেকে আল্লাহর দিকে হিজরত করছি; তাঁর উদ্দেশ্যে পবিত্র ভূমিতে যাচ্ছি এবং তাদের ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত হচ্ছি।
কাতাদা বলেন:
এর মানে হচ্ছে—“আমি আমার আমল, হৃদয় ও নিয়ত নিয়ে আমার রবের দিকে যাচ্ছি”।
অন্য একদল বলেন:
ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এ কথা বলেন তখন, যখন তারা তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করতে চেয়েছিল।
এ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে:
মুহাম্মদ ইবনুল মুসান্না থেকে… সুলাইমান ইবনু সুরদ বলেন: যখন তারা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-কে আগুনে নিক্ষেপ করতে চাইল, তখন তারা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করছিল। এক বৃদ্ধা পিঠে কাঠ নিয়ে আসল। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো: “তুমি কোথায় যাচ্ছ?” সে বলল: “আমি সেই লোকের কাছে যাচ্ছি, যাকে আগুনে ফেলা হবে।”
যখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-কে আগুনে ফেলা হলো, তিনি বললেন: “হাসবিয়াল্লাহ, আলাইহি তাওয়াক্কালতু” অথবা “হাসবিয়াল্লাহ ওয়া নি‘মাল ওয়াকীল”। তখন আল্লাহ বললেন: ﴿يَا نَارُ كُونِي بَرْدًا وَسَلَامًا عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ﴾ — “হে আগুন! ইবরাহীমের জন্য ঠান্ডা ও শান্তি হয়ে যাও।”
লূত-এর পুত্র বা তাঁর ভাতিজা বলল: “আমার আত্মীয়তার কারণে আগুন তাঁকে পোড়ায়নি।”
তখন আল্লাহ আগুনের একটি শিখা পাঠালেন এবং সেটি তাকে (ঐ ব্যক্তিকে) পুড়িয়ে ফেলল।
ইমাম তাবারী বলেন:
আমি যে ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছি, তার কারণ—
আল্লাহ অন্য এক আয়াতে (আনকাবুত: ২৬) বলেছেন: ﴿إِنِّي مُهَاجِرٌ إِلَىٰ رَبِّي﴾,
এবং মুফাসসিরগণ এর অর্থ করেছেন—“আমি শামের ভূমিতে হিজরত করছি”।
তাহলে এখানে ﴿إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي﴾-এর অর্থও তাই। আর ﴿سَيَهْدِينِ﴾ অর্থ—আল্লাহ আমাকে আমার দেখা হিদায়াতে দৃঢ় রাখবেন এবং তাতে সহায়তা করবেন।
বাগাভী বলেন:
“আমি আমার রবের দিকে যাচ্ছি” — অর্থাৎ আমি আল্লাহর দিকে হিজরত করছি; কুফরের শহর ত্যাগ করে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে যাচ্ছি। এ কথা তিনি আগুন থেকে বের হওয়ার পর বলেছেন, যেমন আল্লাহ বলেছেন: ﴿إِنِّي مُهَاجِرٌ إِلَىٰ رَبِّي﴾ [আনকাবুত: ২৬]। আর ﴿سَيَهْدِينِ﴾ — আল্লাহ আমাকে সেই স্থানে নিয়ে যাবেন, যেখানে যেতে তিনি আমাকে আদেশ দিয়েছেন—এটি শাম।
কুরতুবী বলেন:
এই আয়াত হিজরত ও একান্ত ইবাদতের মূল ভিত্তি।
প্রথম যিনি এটি করেছেন, তিনি হলেন ইবরাহীম (আ.)। যখন আল্লাহ তাঁকে আগুন থেকে রক্ষা করলেন, তিনি বললেন: “আমি আমার রবের দিকে যাচ্ছি” — অর্থাৎ, আমি আমার কওম ও জন্মভূমি ছেড়ে সেই স্থানে যাচ্ছি, যেখানে আমি আল্লাহর ইবাদত করতে পারব। কারণ, আল্লাহ আমাকে আমার নিয়তে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন।
মুকাতিল বলেন:
তিনি প্রথম মানুষ, যিনি হিজরত করেছেন—লূত ও সারাহকে নিয়ে শাম অঞ্চলে, যা হলো পবিত্র ভূমি।
আরও বলা হয়েছে: “আমি আমার আমল, ইবাদত, হৃদয় ও নিয়ত নিয়ে যাচ্ছি”—অর্থাৎ, এটি আধ্যাত্মিক যাত্রা, দেহগত নয়।
আরেকটি ব্যাখ্যা:
এ কথা তিনি তাঁর কওমকে বিদায় জানানোর সময় বলেছেন—এটি তাদের জন্য তিরস্কার। অথবা এটি তিনি তাঁর সঙ্গী হিজরতকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন—যাতে তাদের উৎসাহিত করা হয়।
আরও বলা হয়েছে:
এটি তিনি আগুনে নিক্ষেপের আগে বলেছেন। এই ব্যাখ্যায় দুটি অর্থ হতে পারে—
১. “আমি আমার রব যা নির্ধারণ করেছেন, তার দিকে যাচ্ছি।”
২. “আমি মৃত্যুর দিকে যাচ্ছি”—যেমন বলা হয়: “সে আল্লাহর কাছে চলে গেছে।”
কারণ, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) ধারণা করেছিলেন যে, আগুনে পড়ে তিনি মারা যাবেন, কিন্তু আল্লাহ আগুনকে ঠান্ডা ও শান্তি করে দিলেন।
ইমাম ইবন কাসীর বলেন:
আল্লাহ তাঁর খলিল ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এর খবর দিচ্ছেন যে,
তাঁকে সাহায্য করার পর এবং তাঁর কওমের ঈমান আনার আশা শেষ হয়ে গেলে, তিনি তাদের ত্যাগ করে হিজরত করলেন এবং বললেন: ﴿إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي سَيَهْدِينِ﴾।
বাইদ্বাওয়ী বলেন:
এই আয়াতে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তাঁর কওমকে ত্যাগ করে এমন স্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, যেখানে তিনি কেবল তাঁর রবের ইবাদত করবেন এবং নিশ্চিত ছিলেন যে আল্লাহ তাঁকে সঠিক পথে পরিচালিত করবেন। এটি তাঁর পূর্ববর্তী জীবনের সব সম্পর্ক ছিন্ন করার এবং সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণের প্রকাশ।
শাইখ আব্দুর রহমান আস-সি‘দী বলেন:
তারা তাঁর সঙ্গে যা করল এবং তিনি তাদের ওপর হুজ্জত প্রতিষ্ঠা করলেন, তখন তিনি বললেন:
“আমি আমার রবের দিকে যাচ্ছি” — অর্থাৎ, আমি হিজরত করছি; বরকতময় শামের ভূমির দিকে যাচ্ছি।
“তিনি আমাকে হিদায়াত দেবেন” — অর্থাৎ, তিনি আমাকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের পথে পরিচালিত করবেন।
যেমন অন্য আয়াতে তিনি বলেন: ﴿وَأَعْتَزِلُكُمْ وَمَا تَدْعُونَ مِن دُونِ اللَّهِ وَأَدْعُو رَبِّي عَسَىٰ أَلَّا أَكُونَ بِدُعَاءِ رَبِّي شَقِيًّا﴾ — “আমি তোমাদের ও তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদের ডাক, তাদের থেকে দূরে থাকব এবং আমার রবকে ডাকব, আশা করি আমার রবের ডাক আমাকে হতাশ করবে না।”
আত-তাফসীরুল মুইয়াসসার এর লেখকগণ বলেন, সুরা আস-সাফফাতের (আয়াত ৯৯) আল্লাহর বাণী —
﴿وَقَالَ إِنِّي ذَاهِبٌ إِلَىٰ رَبِّي سَيَهْدِينِ﴾ — এর তাফসীর হলো: ইবরাহীম (আ.) বলেছেন — “আমি আমার রবের দিকে হিজরত করছি”, অর্থাৎ আমি এমন স্থানে যাচ্ছি, যেখানে আমি আমার রবের ইবাদত করতে সক্ষম হব। আর আমার রব আমাকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের পথে দিশা দেখাবেন — এটাই তাফসীরুল মুইয়াসসারের ব্যাখ্যা।
পরিশেষে কথা হলো,
- এ আয়াতে কোনো অযাচিত তাওয়ীল নেই।
- এ আয়াত থেকে বুঝার সুযোগ নেই যে আল্লাহ সৃষ্টির ভিতরে।
- এ আয়াত থেকে বুঝার সুযোগ নেই যে আল্লাহ আরশের উপর নয়।
- এ আয়াতকে অপব্যাখ্যা করে শত আয়াত ও হাদীসের বিপরীতে নিয়ে আল্লাহর আরশের উপরে থাকার বিপরীতে দাঁড় করানো যাবে না।
- এ আয়াত থেকে উম্মতের পূর্বসুরী সালাফে সালেহীন যা বুঝেনি তা বুঝার চেষ্টা করে সালাফদের আকীদা-বিশ্বাস (আল্লাহর আরশের উপর উঠা ও আরশের উপর থাকা) এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া কোনোভাবেই কুফর, শির্ক থেকে মুক্ত নয়। যারা তা করতে চাইবে তারা হয় জাহেল, না হয় প্রবৃত্তিপূজারী মুশরিক বলে বিবেচিত হবে।