bn বাংলা
বাংলা বাংলা
English English
عربي عربي


+8801575-547999
সকাল ৯টা হতে রাত ১০টা
Community Welfare Initiative

মীলাদুন্নবী নামে মসজিদে সমবেত হয়ে নবী ﷺ এর আলোচনা করার বিধান

প্রশ্ন:

আমাদের সবার নিকট পরিচিত মীলাদুন্নবী বিদ‘আত; কিন্তু অনেকেই মীলাদুন্নবী নামে অনুষ্ঠান করে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মানুষ্ঠান পালন করার জন্য নয়; বরং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত ও আনুষঙ্গিক বিষয় আলোচনার জন্য, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন ও তারিখ মোতাবেক না হলে এ অনুষ্ঠান কি হারাম? মীলাদ নামকরণই কি এ অনুষ্ঠান হারাম হওয়ার কারণ? অথবা মীলাদ শব্দ বা পরিভাষা পরিহার করে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত আলোচনার অনুষ্ঠান কি হারাম? উল্লেখ্য এ অনুষ্ঠানে লোকদের খানা পরিবেশন করা হবে। আমার জিজ্ঞাসার কারণ আগামী সাপ্তাহের শেষে রবিবার ছুটির দিনে নতুন দুলহানদের উপলক্ষে নৈশ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে, সেখানে যেহেতু লোকের সমাগম হবে, তাই এর আয়োজকরা নৈশ ভোজের পর মসজিদে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত আলোচনার ব্যবস্থা করেছে; কিন্তু তার নামকরণ করেছে মীলাদ, তবে এ দিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিনের মোতাবেক নয়, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান করা হচ্ছে না, তবে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত আলোচনা করা হবে, এ আলোচনা মূলত নাচ-গানের পরিবর্তে, যেন লোকেরা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত শোনে অধিকতর উপকৃত হয়, আমি আপনাদের সৎ উপদেশ কামনা করছি।

দ্বিতীয়ত: নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত ও খাদ্য পরিবেশন করার জন্য মসজিদে অনুষ্ঠান আয়োজন করা কি হারাম?

উত্তর:

আল-হামদুলিল্লাহ,
কোনো মানুষের জন্মানুষ্ঠান পালন করা বা মীলাদ অনুষ্ঠান বৈধ নয়, না কোনো নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের না কোনো মনীষীর? কারণ শরীয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই; বরং এসব অনুষ্ঠান অমুসলিম তথা ইয়াহূদী, নাসারা ও অন্যান্য জাতি-ধর্মের লোকদের থেকে আমদানি করা।

ঈদে মীলাদ অর্থ: কোনো ব্যক্তির জন্মদিন উদযাপন করা। যেমন, কতক লোকের ধারণানুযায়ী ১২ রবিউল আউয়াল নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মানুষ্ঠান উদযাপন করা।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত, চারিত্রিক গুণাবলি ও সুন্নতের আলোচনা সব সময়ই মুস্তাহাব। এ অনুষ্ঠানকে মীলাদ বলা হয় না, যেমন বিয়ের অনুষ্ঠানকে বলা হয় না মীলাদ; কিন্তু কতক মুসলিম দেশে সকল বৈধ অনুষ্ঠানকেই মীলাদ বলে, যেখানে নাচ-গান ও নারী-পুরুষের মেলামেশা নেই। তারা বলে: আমরা বিয়ের দিন মীলাদের আয়োজন করব অথবা খৎনার দিন মীলাদের আয়োজন করব, সেখানে কাউকে বয়ানের জন্য, কাউকে কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদির জন্য আহ্বান করা হয়, এ নামকরণের কোনো ভিত্তি নেই, এ কারণে অনুষ্ঠান প্রশ্নবিদ্ধ বা অবৈধ হবে না। তাই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপদেশ-নসীহতের আয়োজন করা অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত, তার সিরাত ও চারিত্রিক গুণাবলি আলোচনা করা বৈধ, এসব অনুষ্ঠান অবৈধ ও বিদ‘আতী মীলাদ মাহফিলের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

মসজিদে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিতের সভা বা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা বৈধ, তবে ফযীলত মনে করে এ জন্য কোনো দিন নির্দিষ্ট করা বৈধ নয়। যেমন, মীলাদুন্নবীর দিন অথবা শাবানের ১৫ তারিখের দিন অথবা ইসরা ও মি‘রাজের দিন। বরং বছরের যেকোনো সময় এসব অনুষ্ঠান উদযাপন করা, এসব অনুষ্ঠানে খানা পরিবেশন করা বৈধ, তবে এ কথা প্রচার করা শ্রেয় যে, এ অনুষ্ঠানের নাম মীলাদ মাহফিল নয়, যেন কারো অন্তরে মীলাদ মাহফিল বৈধ এ ধারণা না জন্মায়। আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি, তিনি আপনাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের ওপর আমল ও তা প্রচার করার তাওফীক দান করুন। আল্লাহ ভালো জানেন।

Share on