bn বাংলা
বাংলা বাংলা
English English
عربي عربي


+8801575-547999
সকাল ৯টা হতে রাত ১০টা
Community Welfare Initiative

রোযা ও ঈদ কি বিশ্বব্যাপী একসাথে, নাকি নিজের দেশের সাথে?

প্রশ্ন: যদি কোনো ইসলামি রাষ্ট্রে চাঁদ দেখা যায়, আর  আমি যে দেশে বসবাস করি, সেখানে শাবান ও রমযান মাস ত্রিশ দিনে পুরো করা হয়, তাহলে আমি কী করব? রমযান প্রসঙ্গে মানুষের মতপার্থক্যের কারণ কী?

উত্তর: আল-হামদুলিল্লাহ, আপনার জন্য সাওম আপনার দেশের লোকদের সাথে থাকাই আবশ্যক। তারা যদি সাওম পালন করে তাদের সাথে আপনিও সাওম পালন করবেন। আর তারা যদি সাওম পালন না করে, তবে আপনিও তাদের সাথে সাওম পালন করবেন না। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ، وَالفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ، وَالأَضْحَى يَوْمَ تُضَحُّونَ»

‘‘তোমরা যেদিন সাওম পালন করবে সেদিনই সাওম, যেদিন ইফতার করবে সেদিনই ইফতার, আর তোমরা যেদিন কোরবানী করবে সেদিনই কোরবানী।’’[১]

দ্বিতীয়ত: ইখতিলাফ ভালো জিনিস নয়, তাই আপনার দেশের সাথে থাকাই আপনার জন্য জরুরি ও সঙ্গত। আপনার দেশের মুসলিমগণ যখন সাওম পালন করবেন না, আপনি তাদের সাথে সাওম পালন করবেন না। আর যখন তারা সাওম পালন করবে, আপনি তাদের সাথে সাওম পালন করবেন।

আর মতপার্থক্যের কারণ হচ্ছে, কেউ চাঁদ দেখে, কেউ চাঁদ দেখে না। অতপর যারা চাঁদ দেখে, অন্যরা তাদের উপর ভরসা করে, তাদেরকে বিশ্বাস এবং তাদের দেখা অনুযায়ী আমল করে। আবার কখনো তাদের বিশ্বাস কিংবা তাদের দেখা অনুযায়ী আমল করা হয় না, ফলে ইখতিলাফ সংঘটিত হয়। কোনো দেশ চাঁদ দেখে এবং চাঁদ দেখার ফয়সালা দেয়, ফলে দেশবাসী সাওম পালন করে অথবা ইফতার করে। আর অন্য দেশ এ দেখার ওপর ভরসা কিংবা বিশ্বাস করে না ভৌগলিক কিংবা রাজনৈতিক ইত্যাদি কারণে।

সকল মুসলিমের জন্য আবশ্যক হলো চাঁদ দেখেই সাওম পালন করবে আবার চাঁদ দেখে সাওম ভঙ্গ করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস ব্যাপক:

«إِذَا رَأَيْتُمُ الْهِلَالَ فَصُومُوا، وَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَأَفْطِرُوا، فَإِنْ غُمَّ عَلَيْكُمْ فَصُومُوا ثَلَاثِينَ يَوْمًا»

‘‘যখন তোমরা চাঁদ দেখবে সাওম পালন করবে, আবার যখন চাঁদ দেখবে ইফতার করবে। আর আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন হয়, তবে সংখ্যা ত্রিশ দিন পূরণ করবে।’’[২]

যদি সকলে চাঁদ দেখা বিশ্বাস করে এবং মনে করে যে, বাস্তবিকই তা দেখা গেছে, তবে সে হিসেবে সাওম পালন করা ও ইফতার করা ওয়াজিব। হ্যাঁ, যদি বাস্তবতার ব্যাপারে মতপার্থক্যের সৃষ্টি হয়, আর কেউ কাউকে বিশ্বাস না করে, তখন আপনার জন্য সঙ্গত হবে আপনার দেশের মুসলিমগণের সাথে সাওম পালন করা এবং তাদের সাথে ইফতার করা। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«الصَّوْمُ يَوْمَ تَصُومُونَ، وَالفِطْرُ يَوْمَ تُفْطِرُونَ، وَالأَضْحَى يَوْمَ تُضَحُّونَ»

‘‘তোমরা যেদিন সাওম পালন করবে সেদিনই সাওম, যেদিন ঈদুল ফিতর করবে সেদিনই ঈদুল ফিতর, ইফতার, আর তোমরা যেদিন কোরবানী করবে সেদিনই কোরবানী।’’[৩]

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে প্রমাণিত, কুরাইব তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, শাম দেশের লোকেরা জুমু‘আর দিন সাওম পালন করেছে। ইবন আব্বাস বললেন, আমরা চাঁদ দেখেছি শনিবার, আমরা যতক্ষণ না চাঁদ দেখব সাওম পালন করব না, অন্যথায় ত্রিশ দিন পূর্ণ করব। তিনি শামবাসীদের চাঁদ দেখার ওপর আমল করেন নি, যেহেতু উভয় দেশের মাঝে দূরত্ব অনেক বেশি এবং উভয়ের উদয়স্থলও ভিন্ন। তার দৃষ্টিতে এটা ইজতেহাদের বিষয়। ইবন আব্বাস এবং তার অনুসরণ করে যারা বলেছেন, নিজ দেশের সাথে সাওম এবং নিজ দেশের সাথে ইফতার করার জন্য, তাদের মতই আমাদের জন্য অনুসরণীয়।

(শাইখ আব্দুল আযীয ইবন বায রহ., মজমু‘ ফাতাওয়া ওয়ামাকালাত মুতানাওয়েয়াহ)

  1. [১]তিরমিযী, হাদীস নং ৬৯৭।
  2. [২]মুসলিম, হাদীস নং ১০৮১।
  3. [৩]তিরমিযী, হাদীস নং ৬৯৭।
Share on