bn বাংলা
বাংলা বাংলা
English English
عربي عربي


+8801575-547999
সকাল ৯টা হতে রাত ১০টা
Community Welfare Initiative
[১:৩] সূরা আল-ফাতিহা, আয়াত নং ৩
Share on
ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ ٣
দয়াময়, পরম দয়ালু(১)

(১) ‘রহমান-রাহীম’ শব্দদ্বয়ের কারণে মূল আয়াতের অর্থ এই দাঁড়ায় যে, আল্লাহ্ তা‘আলাই সমস্ত এবং সকল প্রকার প্রশংসার একচ্ছত্র অধিকারী কেবল এই জন্য নয় যে, তিনি রব্বুল ‘আলামীন, বরং এই জন্যও যে, তিনি ‘আর-রাহমান’ ও ‘আর-রাহীম’। বিশ্বের সর্বত্র আল্লাহ তা‘আলার অপার অসীম দয়া ও অনুগ্রহ প্রতিনিয়ত পরিবেশিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক জগতে এই যে নিঃসীম শান্তি-শৃঙ্খলা ও সামঞ্জস্য-সুবিন্যাস বিরাজিত রয়েছে, এর একমাত্র কারণ এই যে, আল্লাহর রহমত সাধারণভাবে সবকিছুর উপর অজস্র ধারায় বর্ষিত হয়েছে। সকল শ্রেণির সৃষ্টিই আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করেছে। কাফির, মুশরিক, আল্লাহ্‌দ্রোহী, নাস্তিক, মুনাফিক, কাউকেও আল্লাহ তাঁর রহমত হতে -জীবন-জীবিকা ও সাধারণ নিয়মে বৈষয়িক উন্নতি কোনো কিছু থেকেই- বঞ্চিত করেননি। এমন কি, আল্লাহর অবাধ্যতা এবং তাঁর বিরোধিতা করতে চাইলেও আল্লাহ নিজ থেকে কাউকেও বাধা প্রদান করেননি; বরং তিনি মানুষকে একটি সীমার মধ্যে যা ইচ্ছে তা করারই সুযোগ দিয়েছেন। এই জড় দুনিয়ার ব্যাপারে এটাই আল্লাহর নিয়ম। এজন্যই আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেছেন, “আর আমার রহমত সবকিছুকেই ব্যাপ্ত করে আছে।” [সূরা আল-আরাফ: ১৫৬] কিন্তু এ জড় জগত চূড়ান্তভাবে শেষ হয়ে যাওয়ার পর যে নতুন জগত স্থাপিত হবে, তা হবে নৈতিক নিয়মের বুনিয়াদে স্থাপিত এক আলাদা জগত। সেখানে আল্লাহর দয়া অনুকম্পা আজকের মতো সর্বসাধারণের প্রাপ্য হবে না। তখন আল্লাহর রহমত পাবে কেবল তারাই যারা আজকের দুনিয়ায় আখেরাতের রহমত পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সঠিক কর্মপন্থা গ্রহণ করেছে। ‘রাব্বুল আলামীন’ বলার পর ‘আর-রাহমান’ ও ‘আর-রাহিম’ শব্দদ্বয় উল্লেখ করায় এ কথাই সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, এ বিশ্বলোকের লালন-পালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও ক্রমবিকাশ দানের যে সুষ্ঠু ও নিখুঁত ব্যবস্থা আল্লাহ তা‘আলা করেছেন, তার মূল কারণ সৃষ্টির প্রতি তাঁর অপরিসীম দয়া ও অনুগ্রহ ছাড়া আর কিছুই নয়। অনুরূপভাবে ‘রাহমান’ এর পর ‘রাহীম’ উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা এ কথাই বলতে চান যে, দুনিয়াতে আল্লাহর নিরপেক্ষ ও সাধারণ রহমত লাভ করে কেউ যেন অতিরিক্ত মাত্রায় মেতে না যায় এবং আল্লাহ্ ও তাঁর দেয়া দীনকে ভুলে না বসে। কেননা দুনিয়ার জীবনের পর আরও একটি জগত, আরও একটি জীবন নিশ্চিতরূপে রয়েছে, যখন আল্লাহর রহমত নির্বিশেষে আনুগত্যশীল বান্দাদের জন্যই নির্দিষ্ট হবে। আর প্রকৃতপক্ষে তাদের জীবনই হবে সর্বোতভাবে সাফল্যমণ্ডিত।

— ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
আয়াত ৩/৭