আশুরার সাওমের হুকুম
প্রশ্ন: মহররমের ১০ তারিখে সাওম রাখার ফযীলত ও এর বিধান কী?
উত্তর: মুহাররম মাস হিজরী সনের প্রথম মাস; কিন্তু মুহাররম মাস শুধু প্রথম মাস হিসেবেই তাৎপর্যপূর্ণ তা নয়; বরং এ মাসের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে ইসলামী ইতিহাসের অসংখ্য ঘটনাবলী এবং সংঘটিত হয়েছে আরো অনেক জীবন্ত কাহিনী যা মানুষের হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে জাগ্রত করে ঈমানী চেতনা। তাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এ মাসে সাওম পালনের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন।
এ মাসে সাওম রাখার ফযীলত:
৯, ১০ অথবা ১০, ১১ তারিখে সাওম পালন করা। তবে মনে রাখতে হবে আশুরা উপলক্ষে একমাত্র সাওম পালন ছাড়া অন্য কোনো ইবাদত বন্দেগী করা সম্পূর্ণ বিদ‘আত। তাই যেকোনো ধরনের আচার অনুষ্ঠান মাহফিল সম্পূর্ণ বর্জনীয়।
ইসলামের পূর্বে আশুরার সাওম রাখা ফরয ছিল; কিন্তু যখন রমাদ্বানের সাওম ফরয করা হলো তখন আশুরার সাওম ফরযের বিধান রহিত করা হলো এবং ঐ দিন সাওম রাখা সুন্নত হিসেবে বিবেচিত হলো।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার সাওম রাখার বিভিন্ন ফযীলত বর্ণনা করেন। যেমন, হাদীসে এসেছে: আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أَفْضَلُ الصِّيَامِ، بَعْدَ رَمَضَانَ، شَهْرُ اللهِ الْمُحَرَّمُ، وَأَفْضَلُ الصَّلَاةِ، بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلَاةُ اللَّيْلِ»
“রমাদ্বানের পর সর্বোত্তম সাওম হলো আল্লাহর প্রিয় মুহাররম মাসের সাওম এবং ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের সালাত।”[১]
অপর একটি হাদীসে বলা হয়, আবু কাতাদাহ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার সাওম সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
«يُكَفِّرُ السَّنَةَ الْمَاضِيَةَ»
“বিগত এক বছরের গুণাহের কাফফারা হিসেবে গৃহীত হয়।”[২]
অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবু কাতাদাহ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«صِيَامُ يَوْمِ عَاشُوْراَءِ أَحْتَسِبُ عَلٰى اللهِ أَنْ يُكَفِّرُ السَّنَةَ الَّتِيْ قَبْلَهُ»
“আমি আশা করছি, আশুরার দিনের সাওমকে আল্লাহ তা‘আলা বিগত এক বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে গ্রহণ করে নিবেন।”[৩]
জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
সম্পাদনা: প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া