রমাদ্বান মাসের একটি বিশেষ মুহূর্ত হলো ইফতার। এটি শুধু ক্ষুধা নিবারণের মুহূর্ত নয়, বরং এটি একটি মহান সুন্নাত ও ইবাদতও বটে। আপনার একটি দান একটি অসহায় ও গরীব পরিবারের সিয়াম পালনকে আরো সুন্দর ও সহজ করে তুলতে পারে, তাদের দুঃখের বোঝা হালকা করে মলিন মুখে হাসি ফুটাতে পারে।
ত্রাণ বিতরণ একটি মহৎ ও মানবিক কাজ, যা মানবতার প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতিফলন। এটি শুধু অসহায়ের প্রয়োজন মেটায় না, বরং মানবিক মূল্যবোধ ও সম্প্রীতির চেতনাকে জাগ্রত করে, সমাজের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের একান্ত কাম্য।
শীতকালে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো শীতবস্ত্র বিতরণ। এটি শুধু একটি সাময়িক সাহায্য নয়, বরং এটি সমাজে সম্প্রীতি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলে। আপনার একটু সহযোগিতা কোনো এক অসহায় লোকের শীতের কষ্ট লাঘব করে তার মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে।
ইসলামের পাঁচটি মূল ভিত্তির মধ্যে যাকাত অন্যতম, যা দীনী কর্তব্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অসাম্য দূর করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাকাতের দু’টি খাত হচ্ছে ফকীর ও মিসকীন। আর সে ফকীর মিসকীন যদি হয় দীনী ইলমের তালেবে ইলম তবে তারা আরও বেশি হক্বদার হয়ে যায়; কারণ তারা যাকাতের আরো একটি খাত ‘ফী সাবিলিল্লাহ’ এর সাথেও তার সম্পৃক্ততা সৃষ্টি হয়ে যায়; তাই এ খাতে যাকাত দেয়া সবচেয়ে বেশি নিরাপদ মনে করি।
মসজিদ আল্লাহর ঘর, যা দুনিয়ার বুকে আল্লাহ তা‘আলার নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় স্থান। মসজিদ নির্মাণে আপনার দান শুধু একটি স্থাপনা গড়ে তোলা নয়, বরং এটি মৃত্যুর পরও সাদাকায়ে জারিয়ার সওয়াব অব্যাহত রাখার জন্য অন্যতম। এই মহান কাজে অংশগ্রহণ আপনার জন্য সাদাকায়ে জারিয়ার সওয়াব লাভের পথকে প্রশস্ত করবে—ইনশাআল্লাহ।
মাদরাসা নির্মাণ একটি মহৎ ও কল্যাণমূলক কাজ, যা জ্ঞানের আলো প্রসারতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি শুধু ধর্মীয় শিক্ষার কেন্দ্র নয়, এটি নৈতিকতা, আদর্শ ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলারও মাধ্যম। মাদরাসা নির্মাণে আপনার দান সাদাকায়ে জারিয়ার একটি বিশেষ অংশ, যা গরীব শিশুদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে সহায়ক। আপনার এই মহান উদ্যোগ শুধু বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যেও কল্যাণের দ্বার খুলে দিবে—ইনশাআল্লাহ।
দাওয়াহ ইলাল্লাহ বা আল্লাহর দিকে আহ্বান হচ্ছে ফরয কাজ, যা উম্মতের প্রতিটি সদস্যের ওপর অবশ্য করণীয় বিষয়। মুসলিম মানেই আল্লাহর পথের দা‘ঈ। কিন্তু কিসের দাওয়াত দিবে আর কীভাবে সে দাওয়াতের কাজ করবে, কীভাবে তা ফলপ্রসু হবে—এ সংক্রান্ত হাতে কলমে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া খুবই জরুরী বিষয়। সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এ প্রজেক্টটিকে দাঁড় করানো হয়েছে।
দাওয়াতী গ্রন্থ, দাওয়াতী লিফলেট, দাওয়াতী ম্যাগাজিন বের করার জন্য আমাদেরকে অনেক সময় অন্যের দ্বারস্থ হতে হয়। অনেক সময় এসব প্রকাশনার শিডিউল মেলানো কঠিন হয়ে পড়ে। এসব কাজে নিজস্ব একটি ব্যবস্থাপনা থাকলে দাওয়াতী কাজের গতি ত্বরান্বিত হতে পারে। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে একটি পূর্ণাঙ্গ মুদ্রণ ও প্রকাশনা ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন। এ বিষয়ে সুধীজনদের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
ইসলামের সৌন্দর্য ও সত্য বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম হলো গ্রন্থ। একটি দাওয়াতী গ্রন্থ কোনো এক বিভ্রান্ত পথিকের হিদায়াতের কারণ হতে পারে, একজন অনুসন্ধানীর সত্যের দিশারী হতে পারে। দাওয়াতী গ্রন্থ বিতরণ শুধুই একটি বই বিলি করা নয়, বরং ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার একটি মহান দায়িত্ব। আপনার সহযোগিতা ইসলামের দাওয়াতকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে—ইনশাআল্লাহ।
ইসলামের নির্দেশিত মৌসুম যেমন রামাদ্বান, হজ, আশুরা ইত্যাদি। এগুলোতে আমাদের বিভিন্ন লিফলেট বের করতে হয়। পাশাপাশি, ইসলামে অনুমোদিত নয় এমন দিবস যেমন শবে মিরাজ, মীলাদুন্নবী, শবে বরাত ইত্যাদি সম্পর্কে সতর্কতামূলক নিবন্ধ প্রকাশের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও, সমাজে প্রচলিত শির্ক, বিদ‘আত ও দীনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে মানুষকে সচেতন করার জন্য হ্যান্ডবিল বিতরণ করা হয়। এই মহান উদ্যোগে আপনাদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন নওমুসলিম মুসলিম জাতির জন্য বিশাল এক নিয়ামত। ইসলামে তাদের নতুন জীবনযাত্রা শুরু করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। ফলে তাদের মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়া আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এটি ইসলামের প্রতি তাদের ভালোবাসা ও আত্মবিশ্বাস দৃঢ় করে তোলে। আপনার সাহায্য একজন নতুন মুসলিমকে ইসলামের পথে সুদৃঢ়ভাবে এগিয়ে যেতে ও দীনের সঠিক জ্ঞান অর্জনে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে পারে।
বৃক্ষরোপণ শুধু পরিবেশ রক্ষা বা প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমই নয়, বরং এটি সাদাকায়ে জারিয়ার অন্যতম একটি কাজ, যা মানুষের পাশাপাশি অন্যান্য সৃষ্টি জীবেরও উপকারে আসে। এটি অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং ভূমির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এ কাজের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণ করা একটি মহৎ ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আসুন, পরিবেশের সুরক্ষা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আমরা সকলে বৃক্ষরোপণে এগিয়ে আসি।