bn বাংলা
বাংলা বাংলা
English English
عربي عربي


+8801575-547999
সকাল ৯টা হতে রাত ১০টা
Community Welfare Initiative

রমাদ্বানের পর ভালো কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার দশটি মাধ্যম

রমাদ্বানের পর কী? রমাদ্বান মাসে আল্লাহর নিকট বেশি প্রার্থনা করেছি, অধিক পরিমাণে নফল আদায় করেছি। ইবাদতে স্বাদ অনুভব করেছি। অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করেছি। জামা‘আতের সালাত ত্যাগ করিনি। হারাম জিনিস দেখা থেকে বিরত ছিলাম। কিন্তু রমাদ্বানের পর ইবাদতের স্বাদ হারিয়ে ফেলেছি, যা রমাদ্বান মাসে পেতাম। আর আগে যে ইবাদতের প্রতি লোভ ছিল তা আর এখন পাই না। জামা‘আতের সাথে অনেক সময় ফজরের সালাত ছুটে যায়, অনেক নফল ইবাদত এখন করা হয় না কুরআন তেলাওয়াতও এখন আর আগের মতো করা হয় না। এই সমস্যার কোনো সমাধান বা চিকিৎসা আছে কি?

আপনাদের নিকট রমাদ্বানের পর ভালো কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার দশটি মাধ্যম পেশ করছি।

১. সবকিছুর পূর্বে আল্লাহ তা‘আলার সাহায্য কামনা করতে হবে হেদায়েত এবং দৃঢ়তার ওপর থাকার জন্য, আল্লাহ তা‘আলা গভীর জ্ঞানের অধিকারীদের দো‘আর প্রসংশা করেছেন।

﴿رَبَّنَا لَا تُزِغۡ قُلُوبَنَا بَعۡدَ إِذۡ هَدَيۡتَنَا وَهَبۡ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحۡمَةًۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡوَهَّابُ ٨﴾ [ال عمران: ٨]

“হে আমাদের রব, আপনি হেদায়েত দেওয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা।”[1] 

২. ভালো লোকদের সাথে বেশি উঠা-বসা করতে হবে এবং ওয়াজ-নসিহত ও বিভিন্ন ধরনের দীনি আলোচনা যেখানে হয় সেখানে যাতায়াত করতে হবে।

৩. বইপত্র পড়া এবং ক্যাসেট শ্রবণের মাধ্যমে নেক লোকদের জিবনী জানা, বিশেষ করে সাহাবীদের জীবনী জানা। কেননা এর মাধ্যমে মনের ভিতর সাহস ও আশার সঞ্চার হয়।

৪. বেশি বেশি করে প্রভাব বিস্তারকারী ইসলামি ক্যাসেট শ্রবণ করা: যেমন—ভালো ভালো খতীবদের আলোচনা যেখানে পাওয়া যায় তা সংগ্রহ করা। সময় সময় দোকানে যেয়ে খোঁজখবর নেওয়া যে নতুন কোনো ক্যাসেট বা সিডি বাজারে এসেছে কিনা।

৫. ফরযের প্রতি যত্নশীল থাকা যেমন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত, রমাদ্বানের সিয়াম কোনো কারণে কাযা হয়ে থাকলে তা দ্রুত আদায় করা। কেননা ফরযের মধ্যে অনেক কল্যাণ রয়েছে।

৬. নফলের প্রতিও যত্নশীল হওয়া যদিও তা কম হয়, কিন্তু অবশ্যই তা এমন নফল কাজ হতে হবে যা আদায় করতে মনে ভালো লাগে; কেননা আল্লাহর নিকট ঐ আমল অধিক প্রিয় যা নিয়মিত হয় যদিও তা পরিমাণে কম হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই বলেছেন।

৭. কুরআন হেফয করতে আরম্ভ করা এবং নিয়মিত তেলাওয়াত করা, আর যা হেফয করবে তা ফরয সালাতে এবং নফল সালাতে পড়তে অভ্যাস গড়ে তোলা।

৮. বেশি বেশি যিকির ও ইস্তেগফার করা; কেননা এ কাজটি সহজ কিন্তু তার উপকার অনেক বেশি, ঈমান বৃদ্ধি করে এবং মন ও হৃদয়কে শক্তিশালী করে।

৯. সম্পূর্ণরূপে এমন কিছু থেকে দূরে থাকা যা হৃদয়কে নষ্ট করে দেয়। যেমন—অসৎ লোকের সঙ্গ, টেলিভিশন দেখা, কাম উদ্রেককারী গান শোনা, অশ্লীল অনুষ্ঠানে যাওয়া, অশ্লীল চিত্র দেখা ইত্যাদি।

১০. সর্বশেষ হে বন্ধুগণ! আপনাদের উপদেশ দিচ্ছি দ্রুত তাওবা করার জন্য খালেস তাওবা। যেখান থেকে আর পিছনে ফিরবেন না। বান্দা তাওবা করলে আল্লাহ তা‘আলা অত্যন্ত খুশি হন। আপনারা ঐ সমস্ত লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না যারা আল্লাহকে চিনে না রমাদ্বান ছাড়া অন্য সময়ে। তাদের সম্পর্কে পূর্বসূরীরা বলেন, তারা হতভাগ্য যারা রমাদ্বান ছাড়া অন্য সময়ে আল্লাহকে চিনে না।

সমাপ্ত

আখতারুজ্জামান মুহাম্মাদ সুলাইমান

সম্পাদনা: প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া


[1] সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ০৮।

Share on