bn বাংলা
বাংলা বাংলা
English English
عربي عربي


+8801575-547999
সকাল ৯টা হতে রাত ১০টা
Community Welfare Initiative

ঈদের আদবসমূহ

প্রশ্ন: ঈদের দিনে কোন কোন সুন্নত ও আদব আমরা পালন করতে পারি?

উত্তর সারসংক্ষেপ

ঈদের সুন্নতসমূহ:

১- ঈদগাহে যাওয়ার আগে গোসল করা, ২- ঈদুল ফিতরের জন্য সালাতের আগে এবং ঈদুল আযহার জন্য সালাতের পর খাবার খাওয়া, ৩- ঈদের দিনে তকবির পাঠ করা, ৪- একে অপরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো, ৫- ঈদের জন্য সাজ-সজ্জা করা, ৬- ঈদের সালাতে যাওয়ার জন্য এক পথ দিয়ে যাওয়া এবং ফিরে আসার জন্য অন্য একটি পথ ব্যবহার করা।

বিস্তারিত উত্তর:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। ঈদের সকালে একজন মুসলিম যে সুন্নত ও আদবসমূহ অনুসরণ করতে পারেন, তা হলো:

১. ঈদের দিনের পবিত্রতা ও মহিমা তুলে ধরতে, ঈদগাহে গমনের পূর্বে গোসল করা মুস্তাহাব:

বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত আছে যে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ঈদের দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন।[1]

ইমাম নববী রাহিমাহুল্লাহ উল্লেখ করেছেন যে, আলেমগণের সর্বসম্মত অভিমত অনুযায়ী এটি সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। যেমন জুমু‘আর সালাত ও অন্যান্য বৃহৎ সমাবেশের পূর্বে গোসল করাকে মুস্তাহাব বলা হয়েছে, তেমনই ঈদের দিনের জন্যও এটি প্রযোজ্য—বরং ঈদের মাহাত্ম্যের কারণে এর গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে।

২. ঈদুল ফিতরের সালাতে যাওয়ার আগে এবং ঈদুল আযহার সালাতের পরে কিছু খাওয়া খাওয়া:

ঈদুল ফিতরের সালাতে যাওয়ার আগে কিছু খেজুর খেয়ে নেওয়া অন্যতম একটি সুন্নত শিষ্টাচার। কেননা সহীহ বুখারীতে আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন— রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে যাওয়ার আগে কয়েকটি খেজুর খেতেন এবং তিনি তা বেজোড় সংখ্যায় গ্রহণ করতেন।[2]

সালাতে যাওয়ার আগে খাওয়া মুস্তাহাব, কারণ এতে সিয়াম পালনকারীকে সেদিনের জন্য পানাহার এবং সিয়াম সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়া যায়, যার মাধ্যমে সিয়াম রাখার নিষেধাজ্ঞা পরিপালিত হয় এবং তা সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।

ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহ এভাবে এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, যাতে সিয়ামের সংখ্যা বৃদ্ধির পথ রুদ্ধ করা যায় এবং এর মাধ্যমে অবিলম্বে আল্লাহর নির্দেশ পালন করা সম্ভব হয়।[3]

যদি কারো কাছে খেজুর না থাকে, তবে তাকে উচিত অন্য কোনো হালাল খাদ্য গ্রহণ করা।

আর ঈদুল আযহার দিনে সালাত থেকে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত কোনো কিছু না খাওয়া মুস্তাহাব। যদি সে কোরবানী দিয়ে থাকে, তবে সালাতের পর কোরবানীর গোশত দিয়ে আহার করবে। আর যদি কোরবানী না দিয়ে থাকে, তবে সালাতের আগে খেতে কোনো অসুবিধা নেই।

৩. ঈদের দিনে তাকবীর দেওয়া:

এটি ঈদের দিনের মহান সুন্নত। দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী:

﴿وَلِتُكۡمِلُواْ ٱلۡعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمۡ وَلَعَلَّكُمۡ تَشۡكُرُونَ﴾ [البقرة: ١٨٥] 

“তিনি চান তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি যে তোমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন সে জন্য তাকবির উচ্চারণ কর (আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর) এবং যাতে তোমরা শোকর কর।”[4]

ওয়ালিদ ইবনে মুসলিম বলেন, “আমি আওযায়ি ও মালিক ইবনে আনাসকে দুই ঈদের দিন উচ্চস্বরে তাকবির দেওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তাঁরা উভয়ে একযোগে উত্তর দেন: ‘হ্যাঁ, আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ঈদুল ফিতরের দিন ইমাম আসার পূর্ব পর্যন্ত উচ্চস্বরে তাকবির দিতেন’।”

আবু আব্দুর রহমান আস-সুলামি থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, “তারা ঈদুল আযহার তাকবিরের চেয়ে ঈদুল ফিতরের ব্যাপারে বেশি কঠোর ছিলেন।” ওকী বলেন, এখানে তিনি তাকবিরের ব্যাপারে বুঝাতে চাচ্ছেন।[5]

দারাকুতনী এবং অন্যান্য গ্রন্থকারগণ বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন সকালে ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত অবিরত তাকবীর পাঠ করতে থাকতেন। এরপর ইমাম সাহেব ঈদগাহে আসা পর্যন্ত তাকবীর উচ্চারণ অব্যাহত রাখতেন।

ইবনে আবু শাইবাহ সহীহ সনদে যুহরী থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, “লোকেরা ঈদের দিন যখন তাদের ঘর থেকে বের হতো, তখন থেকে ঈদগাহে আসা পর্যন্ত এবং ইমাম আসার আগ পর্যন্ত তারা তাকবির দিতে থাকত। ইমাম যখন সেখানে উপস্থিত হতেন, তখন সবাই চুপ হয়ে যেত। ইমাম তাকবির শুরু করলে, তারাও তাকবির দিতে থাকতেন।”[6]

ঘর থেকে বের হওয়া থেকে শুরু করে ঈদগাহে পৌঁছানো এবং ইমাম আসা পর্যন্ত তাকবীর দেওয়ার বিষয়টি সালাফদের মাঝে অত্যন্ত মশহুর ছিল। একদল গ্রন্থকার এ বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। যেমন—ইবনে আবু শাইবাহ, আব্দুর রাজ্জাক, এবং ফিরইয়াবি ‘আহকামুল ঈদাইন’ গ্রন্থে একাধিক সালাফের বর্ণনা উপস্থাপন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে—নাফে ইবনে জুবাইর নিজে নিয়মিত তাকবির দিতেন এবং যখন তিনি দেখতেন যে, অন্যান্য লোকেরা তাকবির দিচ্ছে না, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে বলতেন, “আপনারা কি তাকবির দিবেন না?”

ইবনে শিহাব আয-যুহরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘‘লোকেরা যখন বাড়ী থেকে বের হত, তখন থেকে শুরু করে ইমাম আসার আগ পর্যন্ত তারা তাকবীর দিতেন।’’

ঈদুল ফিতরের তাকবীর দেওয়ার সময় শুরু হয় ঈদের রাত থেকে এবং তা ঈদের সালাতের ইমাম হাযির হওয়া পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।

অন্যদিকে, ঈদুল আযহার তাকবীর শুরু হয় যিলহজ্জ মাসের প্রথম দিন থেকে এবং তা তাশরিকের সর্বশেষ দিন, অর্থাৎ সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলতে থাকে।

তাকবীর দেওয়ার পদ্ধতি:

মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাতে সহীহ সনদে ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে উদ্ধৃত হয়েছে যে, তিনি তাশরিকের দিনগুলোতে এভাবে তাকবির দিতেন:

 «اَللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ»

(উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ)

(অনুবাদ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।) [ইবনে আবি শাইবা অন্যস্থানে একই সনদে ‘তাকবির’ তিনবার দেওয়ার বর্ণনা উল্লেখ করেছেন]

আল-মুহামিলি সহীহ সনদে ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন:

«الهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا، اللهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا، اللهُ أَكْبَرُ، وَأَجَلُّ اللهُ أَكْبَرُ، وَلِلَّهِ الْحَمْدُ»

(উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার কাবিরা। আল্লাহু আকবার কাবিরা। আল্লাহু আকবার ওয়া আজাল্ল। আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।)

(অনুবাদ: আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড় অতীব বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড় ও সম্মানিত। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।)[7]

৪. শুভেচ্ছা বিনিময় করা:

ঈদের শিষ্টাচারের মধ্যে রয়েছে পরস্পরের মাঝে উত্তম পদ্ধতিতে শুভেচ্ছা বিনিময় করা। সে শুভেচ্ছার ভাষা যে ধরনেরই হোক না কেন। যেমন কেউ কেউ বলেন,

«تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكُمْ»

(উচ্চারণ: তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম)

(অনুবাদ: আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের নেক আমলগুলো কবুল করে নিন)। কিংবা ঈদ মোবারক কিংবা এ ধরনের অন্য যেকোনো বৈধ ভাষায়।

জুবাইর ইবনে নুফাইর থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “ঈদের দিন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় বলতেন: تُقُبِّلَ مِنَّا وَمِنْكَ (তুকুব্বিলা মিন্না ও মিনকা), অর্থাৎ ‘আমাদের আমল ও আপনার আমল কবুল হোক।’ ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, এর সনদ সহীহ।”[8]

সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের একটি প্রথা ছিল যা তাদের একে অপরের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধার নিদর্শন ছিল। ইমাম আহমাদ ও অন্যান্য আলেমগণ এই প্রথাকে শরীয়তসম্মত হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং এর উপর রুখসত (ছাড়) দিয়েছেন।

এমন কিছু বর্ণনা রয়েছে যা বিভিন্ন উপলক্ষে শুভেচ্ছাজ্ঞাপন শরীয়তসম্মত হওয়ার প্রমাণ বহন করে। যেমন—যখন আল্লাহ কোনো এক ব্যক্তির তাওবা কবুল করলেন, তখন সাহাবায়ে কেরাম আনন্দিত হয়ে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানালেন।

নিঃসন্দেহে, এ ধরনের শুভেচ্ছাজ্ঞাপন উন্নত আখলাক ও মুসলিম সমাজের সুন্দর রীতির অন্তর্ভুক্ত। শুভেচ্ছাজ্ঞাপনের ব্যাপারে, অন্তত এটুকু বলা যায় যে, যদি কেউ আপনাকে ঈদ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানায়, তবে আপনিও তাকে শুভেচ্ছা জানাবেন। আর যদি কেউ চুপ থাকে, তাহলে আপনি চুপ থাকতে পারেন; যেমনটি ইমাম আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: “যদি কেউ আমাকে শুভেচ্ছা জানায়, আমি এর প্রত্যুত্তর দিই; তবে আমি নিজে শুরুতে শুভেচ্ছা জানাই না।”

৫. ঈদ উপলক্ষে সুন্দর পোশাক পরিধান করা:

আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, একবার উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বাজারে বিক্রির জন্য তোলা একটি রেশমের তৈরি জুব্বা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে এসে বললেন: “হে আল্লাহর রাসূল! আপনি এ জুব্বাটি কিনুন, ঈদের দিন বা প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাতের সময় আপনি এ সুন্দর পোশাকটি পরিধান করবেন।” তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন: “এটি এমন ব্যক্তি বা মানুষের পোশাক, যার কোনো ভাগ বা অংশ নেই—অর্থাৎ, তার মধ্যে তাকওয়া বা সওয়াবের কোনো উপাদান নেই।”[9]

অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদ উপলক্ষে সুন্দর পোশাক পরিধান করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন। কিন্তু তিনি এ জুব্বা কিনতে সম্মতি দেননি; যেহেতু সেটি ছিল রেশমের তৈরি জুব্বা।

জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি বিশেষ জুব্বা ছিল, যা তিনি দুই ঈদের দিন এবং জুমু‘আর দিনে পরিধান করতেন।[10]

ইমাম বাইহাকী রাহিমাহুল্লাহ একটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন যে, ইবনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা ঈদের দিন তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি পরিধান করতেন।

ঈদের সালাতে যাওয়ার সময় প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত নিজের সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পরিধান করে ঈদগাহে যাওয়া। তবে, নারীদের জন্য বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, তারা যেন সাজসজ্জা গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। কারণ, তাদেরকে বেগানা পুরুষদের সামনে নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন থেকে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব, যে নারী ঈদের সালাতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন, তার জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা বা পুরুষদেরকে আকৃষ্ট করার মতো কিছু করা হারাম। কেননা, তিনি শুধু ইবাদতের উদ্দেশ্যে বের হচ্ছেন, অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে নয়।

৬. সালাতের জন্য এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া, আর অন্য রাস্তা দিয়ে আসা:

জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের দিন ভিন্ন ভিন্ন রাস্তা ব্যবহার করতেন।[11]

এ আমলের হিকমত সম্পর্কে বলা হয়, যাতে কিয়ামতের দিন উভয় রাস্তা আল্লাহর কাছে তাঁর পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করে। কিয়ামতের দিন, যমীন যেভাবে তার ওপর সংঘটিত ভালো-মন্দ সব আমলের কথা জানিয়ে দেবে, তেমনি এর মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়।

অন্য একটি অভিমত অনুযায়ী, এই আমলের উদ্দেশ্য হলো উভয় রাস্তায় ইসলামের নিদর্শনকে স্পষ্টভাবে জাহির করা।

আরেকটি অভিমত হলো—আল্লাহর যিকিরকে উন্মোচিত করা এবং তা মানুষের অন্তরে সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করা।

আরেকটি অভিমত হলো—মুনাফিক ও ইয়াহূদীদেরকে ক্ষেপিয়ে তোলা এবং তাদের সামনে এটি তুলে ধরা যে, তাঁর সাথে অনেক বেশি মানুষ রয়েছে।

আরেকটি অভিমত হলো—এভাবে তাঁর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা, যাতে তিনি মানুষকে ফতোয়া প্রদান, তালিম দেওয়া, অনুসরণকারী মানুষের প্রয়োজন পূরণ, অভাবীদের সাদাকাহ প্রদান, কিংবা আত্মীয়স্বজনের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র: موقع الإسلام سؤال وجواب

অনুবাদ: মিজানুর রহমান ফকির


[1] মুয়াত্তা, হাদীস নং ৪২৮।
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৫৩।
[3] ফাতহুল বারী (২/৪৪৬)।
[4] সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৫।
[5] দেখুন: ইরওয়াউল গালিল (৩/১২২)।
[6] দেখুন: ইরওয়াউল গালিল (২/১২১)।
[7] দেখুন: আল-ইরওয়া (৩/১২৬)।
[8] আল-ফাতহ (২/৪৪৬)।
[9] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৪৮।
[10] সহীহ ইবনে খুযাইমাহ, হাদীস নং ১৭৬৫।
[11] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯৮৬।

Share on